Loader
শিক্ষা, শান্তি, সেবা ও সামাজিক উন্নয়নই নুরুল ইসলাম ফাউন্ডেশন-এরমূল লক্ষ্য। পারস্পরিক সহযোগিতা, সহমর্মিতা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও পরোপকার-এর মাধ্যমে বিশ্বমানবতার কল্যাণই আমাদের একমাত্র ব্রত। আর্তমানবতার সেবা, সমাজ সংস্কার, কর্মসংস্থান তৈরি, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, দারিদ্র্য বিমোচন, এতিম, গরিব, বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের ভরণপোষণ, ছিন্নমূল ও পথবাসীদের পুনর্বাসন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানসহ সব শ্রেণির নাগরিকদের নৈতিক ও চারিত্রিক উন্নয়নের মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ ও স্বনির্ভর দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখি আমরা।

নুরুল ইসলাম ছিলেন অর্থনীতির তারকা


ড. জাহিদ হোসেন

যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন।
তিনি তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বলেছেন, নুরুল ইসলাম দেশকে ও দেশের মানুষকে অনেক কিছু দিয়েছেন। দেশে শিল্প গড়ার ক্ষেত্রে যখন পদে পদে রয়েছে নানা বাধা তখন স্বল্প সময়ে তিনি বড় শিল্প গ্রুপ গড়ে তুলেছেন। এত স্বল্প সময়ে এত বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সহজ কথা নয়। তাও এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নয়, যা ঝড়ের বেগে ঝরে পড়ে যাবে।
বরং তার প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই টেকসই ও প্রতিষ্ঠিত। বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান গড়েছেন তিনি। এর জন্য তাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। নানা বাধা অতিক্রম করে সামনে এগোতে হয়েছে। কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠার কারণেই তিনি যেখানে হাত দিয়েছেন সেখানেই সফলতা নিয়ে এসেছেন। এটি সবার পক্ষে সম্ভব হয় না।
বিশ্বব্যাংকের সাবেক এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ব্যতিক্রমধর্মী ৪১টি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মাধ্যমে অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রেখেছেন। তিনি শিল্পের বিভিন্ন শাখায় রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। হাজার হাজার মানুষের জন্য তৈরি করেছেন কর্মসংস্থান। অনেক নতুন নতুন খাতেও তিনি ঝুঁকি নিয়ে বিনিয়োগ করেছেন। যা তার কঠোর পরিশ্রমের কারণে সফলতা নিয়ে এসেছে। সংক্ষেপে বলতে গেলে বলা যায়, তিনি ছিলেন একজন অর্থনীতির তারকা।
দেশের অর্থনীতিতে তার বহুমুখী অবদানের কথা উল্লেখ করে ড. জাহিদ হোসেন বলেন, অর্থনীতির সমৃদ্ধির জন্য নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন তিনি। স্বাধীনতার পর দেশের অর্থনীতিতে আমদানির বিকল্প পণ্য তৈরি শুরু করেন তিনিই। এর মাধ্যমে তিনি আমদানিনির্ভরতা কমাতে সহায়তা করেছেন। চাপ কমেছে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর। আমদানির বিকল্প হিসেবে এসব পণ্য দেশের মানুষ গ্রহণ করেছে। ফলে দেশেই তৈরি হয়েছে এসব পণ্য। এতে দেশীয় শিল্প বিকাশে সহায়ক হয়েছে।
বেসরকারি খাতের বিকাশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর দেশের বেসরকারি খাতের বিকাশের পথ মসৃণ ছিল না। পদে পদে ছিল বাধা। এই বাধা অতিক্রম করে ওই সময়ে যেসব উদ্যোক্তা এগিয়ে আসেন তাদের মধ্যে নুরুল ইসলাম ছিলেন অন্যতম একজন। প্রযুক্তিনির্ভর পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করে সারা দেশে যেমন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে প্রসারিত করেছেন, তেমনি করেছেন মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি।
যা দেশের অর্থনীতির বিকাশের পথকে সুগম করেছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যেসব উদ্যোক্তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তাদের মধ্যে তিনি একজন। তার উদ্যোগী ভূমিকা একদিকে যেমন দেশকে নতুন শিল্পের দিকে নিয়ে গেছে, তেমনি বাংলাদেশের সম্ভারে যোগ হয়েছে নতুন পণ্যের উৎপাদকের সুনাম। এভাবে বাংলাদেশের সম্ভারে যোগ হয়েছে অনেক নতুন নতুন পণ্য।
যেগুলো আগে বাংলাদেশ বিদেশ থেকে আমদানি করত। এখন সেগুলো দেশেই তৈরি হচ্ছে। দেশের মানুষ দেশে তৈরি পণ্য ব্যবহার করছে। এতে মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম বাড়ছে। দেশি পণ্য ব্যবহার করে নিজেরাও গর্বিত হচ্ছে। বেসরকারি খাতকে এ ধরনের উদ্যোগী ভূমিকা নিতে আরও উৎসাহিত করতে হবে বলে তিনি মত দেন