Loader
শিক্ষা, শান্তি, সেবা ও সামাজিক উন্নয়নই নুরুল ইসলাম ফাউন্ডেশন-এরমূল লক্ষ্য। পারস্পরিক সহযোগিতা, সহমর্মিতা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও পরোপকার-এর মাধ্যমে বিশ্বমানবতার কল্যাণই আমাদের একমাত্র ব্রত। আর্তমানবতার সেবা, সমাজ সংস্কার, কর্মসংস্থান তৈরি, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, দারিদ্র্য বিমোচন, এতিম, গরিব, বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের ভরণপোষণ, ছিন্নমূল ও পথবাসীদের পুনর্বাসন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানসহ সব শ্রেণির নাগরিকদের নৈতিক ও চারিত্রিক উন্নয়নের মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ ও স্বনির্ভর দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখি আমরা।

রাজনৈতিক দলের নেতা, ব্যাংকার ও ব্যবসায়ীদের প্রতিক্রিয়া ; শিল্প বিকাশে অন্যতম পথিকৃৎ নুরুল ইসলাম


দেশবরেণ্য শিল্পপতি, যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের মৃত্যুতে সর্বত্র নেমে এসেছে শোকের ছায়া। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, ব্যাংকার ও ব্যবসায়ীরা প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, তিনি এ দেশের মানুষের কথা ভাবতেন। দেশের শিল্প উন্নয়নে তার বিশাল ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ করে তার মেধা, দক্ষতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ও মানুষের কর্মসংস্থান তৈরিতে আধুনিক চিন্তার সাহসী উদ্যোক্তা ছিলেন। শত পরিশ্রম করে গড়ে তুলেন অসংখ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান

শিল্প বিকাশে পথিকৃৎ ছিলেন নুরুল ইসলাম
-আ স ম রব
 
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ছিলেন আমাদের মুক্তি সংগ্রামের অন্যতম বীর মুক্তিযোদ্ধা। দেশের স্বাধীনতা অর্জনের লড়াইয়ে তিনি আপসহীন ভূমিকা পালন করেছেন। স্বাধীনতার পর শিল্প বিকাশে অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন তিনি। তার একাগ্রতা, নিষ্ঠায় দেশের বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী যমুনা গ্রুপ প্রতিষ্ঠিত হয়। নুরুল ইসলামের মৃত্যু দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।


হাজারও মানুষের কর্মসংস্থানের কারিগর
-ডা. জাফরুল্লাহ
 
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ার এবং হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের কারিগর বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম। বাংলাদেশের শিল্প উন্নয়নে তার বিশাল ভূমিকা রয়েছে। একজন কৃতী ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি মানুষের কল্যাণে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক ও সমাজসেবামূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ও মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে আধুনিক চিন্তার সাহসী উদ্যোক্তা তিনি।


অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন
-মান্না
 
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম তার ৪১টি প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন। বাংলাদেশের শিল্প, বাণিজ্যের বিকাশে তিনি অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন, যা দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে।
তার মৃত্যুতে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। কর্মের জন্য দেশের মানুষ সারাজীবন তাকে মনে রাখবে।


অভিভাবক হারিয়েছি
-লিয়াকত হোসেন খোকা, এমপি
 
নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য, জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা বলেছেন, দেশের বেকার সমস্যা দূর করতে সবসময় নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির কথা ভাবতেন যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট শিল্পপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম। একে একে ৪১ প্রতিষ্ঠান তৈরি করে তিনি অসংখ্য মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করেছেন। তিনি একজন সাহসী শিল্পোদ্যোক্তা ও দেশপ্রেমিক ছিলেন। এই শিল্পপতির প্রয়াণে দেশ একজন দেশপ্রেমিক শিল্পোদ্যোক্তাকে হারাল।


তরুণ উদ্যোক্তাদের কাছে অনুকরণীয় তিনি
-তাবিথ আউয়াল
 
যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের নামাজের জানাজায় অংশ নেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল। জানাজা শেষে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, নুরুল ইসলামের মৃত্যুতে আমি কী বলব ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। তিনি ছিলেন আমার অভিভাবকের মতো। আমি তাকে অ্যাঙ্কেল বলে ডাকতাম। তার চলে যাওয়ায় আমি সত্যিকার অর্থে একজন অভিভাবককে হারালাম। নুরুল ইসলাম এ দেশের মানুষের কথা ভাবতেন। পরিশ্রম করে গড়ে তুলেছেন অসংখ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান।


দেশ ও মানুষের জন্য কিছু করার প্রচণ্ড বাসনা ছিল
-মো. সোহরাব উদ্দীন
 
যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম নুরুল ইসলামের ছোট ভাই মো. সোহরাব উদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশে আমার ভাইয়ের মতো একজন শিল্পপতি নেই। তিনি সবসময় দেশ ও মানুষের জন্য কিছু করার চিন্তা করতেন। দেশে অনেক শিল্পপতি আছেন, কিন্তু তার মতো ক্ষণজন্মা পুরুষ বিরল। যে কোনো কাজ বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে তিনি দৃঢ় থাকতেন। তিনি বলেন, আমার ভাই তার স্বপ্ন হয়তো শেষ করে যেতে পারেননি। কিন্তু তার যে অসমাপ্ত কাজগুলো রয়েছে তার উত্তরাধিকারী হিসেবে যারা রয়েছেন তারা সম্পাদন করবেন সেই আশাই করছি।


দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে আপস করেননি
খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, সাবেক ডেপুটি গভর্নর


বাংলাদেশ ব্যাকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ছিলেন দেশীয় শিল্পের একজন সফল উদ্যোক্তা। গড়েছেন বহু শিল্পপ্রতিষ্ঠান। সৃষ্টি করেছেন লাখো মানুষের কর্মসংস্থান। এসব উদ্যোগ সফল করতে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু কখনও ঋণখেলাপি ছিলেন না। এমনকি মৃত্যুকালেও তিনি এক টাকা খেলাপি ঋণ রেখে যাননি। অথচ তার থেকে অনেক ছোট উদ্যোক্তা ব্যাংকঋণ নিয়ে তা আর ফেরত দেননি। তিনি একাধারে দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও খেলাপি ঋণের ঘোরতর বিরোধী ছিলেন। কখনও কোনো দুর্নীতিবাজের সঙ্গে সমঝোতা করেননি। ছিলেন আপসহীন। সাধারণত পত্রিকার মালিকরা গা বাঁচিয়ে চলেন। কিন্তু নুরুল ইসলাম ছিলেন ব্যতিক্রম। এছাড়া অর্থ পাচার ও ব্যাংক লুটেরাদের তীব্র বিরোধী ছিলেন তিনি। যার বহিঃপ্রকাশ হতো যুগান্তরের মাধ্যমে। তিনি আজ নেই। আছে তার আদর্শ আর নীতি। আশা করি, সেই নীতি-আদর্শই অনুসরণ করবে তার উত্তরসূরিরা।


প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবেলা করে শিল্প গড়েছেন
মোহাম্মদ আলী খোকন, সভাপতি, বিটিএমএ

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, নুরুল ইসলাম অনেক প্রতিকূল পরিবেশ ও নেতিবাচক পরিস্থিতি মোকাবেলা করে শিল্প গড়ে তুলেছেন। একটি শিল্প করতে অনেক ধরনের বাধা অতিক্রম করতে হয়। শিল্পের সরকারি অনুমোদন পাওয়া থেকে শুরু করে ব্যাংকঋণ, পণ্য বাজারজাতকরণ- সব ক্ষেত্রেই প্রতিকূল পরিস্থিতিকে মোকাবেলা করতে হয়। এসব মোকাবেলা করেই তিনি একের পর এক শিল্প স্থাপন করেছেন। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তার অবদান অনস্বীকার্য। তিনি শুধু টেক্সটাইল সেক্টরই নয়, অনেক খাতে তার বিনিয়োগ ছিল। দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্ক নির্মাণ করে তিনি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।


নতুন উদ্যোক্তাদের কাছে অনুকরণীয় হয়ে থাকবেন
আবদুল আউয়াল মিন্টু, সাবেক সভাপতি, এফবিসিসিআই


এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, নুরুল ইসলাম ছিলেন একজন সাহসী শিল্পোদ্যোক্তা। তিনি অনেক সাহস নিয়ে নিত্যনতুন এবং বড় ধরনের শিল্প গড়ে তুলেছেন। এগুলোকে প্রতিযোগিতায় সক্ষম করে তুলেছেন। একটি শিল্পকে দাঁড় করানোর পেছনে তার ছিল কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠা। অনেক প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে গিয়েছেন। তিনি নতুন শিল্পোদ্যোক্তাদের কাছে অনুকরণীয় হয়ে থাকবেন।


দেশ নিয়েই তিনি ভাবতেন দেশেই বিনিয়োগ করেছেন
কুতুবউদ্দিন আহমেদ, চেয়ারম্যান, এনভয় গ্রুপ


এনভয় গ্রুপের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমেদ বলেন, নুরুল ইসলামের মৃত্যুতে আমরা দেশবরেণ্য একজন শিল্পপতিকে হারালাম। তার মৃত্যুতে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হল, যা পূরণ হওয়ার নয়। এত প্রতিকূলতার মুখে বড় মাপের ব্যবসায়ী হয়েও তিনি কখনও ঋণখেলাপি ছিলেন না। ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে টালবাহানা করার কোনো রেকর্ড তার নেই। কোনো ধরনের কলঙ্ক তাকে ছুঁতে পারেনি। বাংলাদেশের অনেক বড় বড় শিল্পপতির এ ধরনের সমস্যা থাকলেও তার এ সমস্যা ছিল না। আমার দেখা একজন আদর্শবান ও সহজসরল ব্যবসায়ী ছিলেন তিনি। এটা সবার জন্যই অনুকরণীয় বলে আমি মনে করি। তিনি নির্লোভ ব্যক্তি ছিলেন। কোনো উচ্চাভিলাস ছিল না তার। তিনি নিজের মতো করেই একটি জগৎ সৃষ্টি করেছিলেন, যা বাংলাদেশের শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য শিক্ষণীয়। তার কোনো বিদেশি পাসপোর্টও ছিল না। তিনি দেশকে ভালোবাসতেন। দেশ নিয়েই চিন্তা করতেন। দেশেই বিনিয়োগ করেছেন।


কঠোর পরিশ্রম করে শিল্প গড়েছেন
লিয়াকত আলী খান মুকুল, চেয়ারম্যান, রূপায়ন গ্রুপ


রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুল যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বলেছেন, তিনি ছিলেন ব্যবসায়ী সমাজের কাছে আলোকবর্তিকা। কঠোর পরিশ্রম করে কীভাবে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হয় তা জানতেন। করেও দেখিয়েছেন। তার মৃত্যুতে ব্যবসায়ী সমাজের অপূরণীয় ক্ষতি হল।


কর্মসংস্থান সৃষ্টির পথিকৃৎ ছিলেন
সেলিম ওসমান, সভাপতি, বিকেএমইএ


বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) সভাপতি সেলিম ওসমান বলেছেন, নিটওয়্যার শিল্প খাতে নুরুল ইসলামের বিশাল অবদান রয়েছে। তিনি এ খাতে বড় বিনিয়োগ করেছেন। নিটওয়্যার খাতের উন্নয়নে যেমন বড় ভূমিকা রেখেছেন, তেমনি রফতানিতেও তার অনেক অবদান রয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে কর্মসংস্থানে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। নুরুল ইসলাম বেঁচে থাকলে করোনা-পরবর্তী সময়ে নিশ্চয় নতুন আরও উদ্যোগ নিতেন। যেগুলোয় নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হতো। চাকরিহারাদের পুনর্বসান হতো। তাকে এই অসময়ে বড্ড বেশি প্রয়োজন ছিল।


অনেক খাতে বিনিয়োগে তিনি পাইওনিয়র
শামস মাহমুদ, সভাপতি, ডিসিসিআই


ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, একাত্তরের রণাঙ্গনের সৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের মৃত্যুতে আমরা দেশপ্রেমিক একজন উদ্যোক্তাকে হারালাম। তিনি সব সময় দেশের কথা চিন্তা করতেন, যা তার বিনিয়োগের দিকে তাকালে বোঝা যায়। দেশের মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে তিনি বিশাল অবদান রেখেছেন। ব্যবসা-বাণিজ্যের সব খাতেই তার পদচারণা ছিল। তবে তিনি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে মৌলিক শিল্প স্থাপন করতেন। এর মধ্যে আবাসন, টেক্সটাইল, মিডিয়া, ইলেকট্রনিক্স- সব খাতেই তার বিনিয়োগে পণ্য বহুমুখীকরণের উৎকৃষ্ট উদাহরণ। অনেক খাতে বিনিয়োগে তিনিই পাইওনিয়ার ছিলেন। পরবর্তী সময়ে অনেকে তার পথ অনুসরণ করেন। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরে শামস মাহমুদ বলেন, নুরুল ইসলাম আমার কাছে অভিভাবকের মতো ছিলেন। নতুন উদ্যোক্তাদের উপদেশ দিতেন। কখনও ভাবতেন, বুদ্ধি-পরামর্শ দিলে তার ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তার কাছে উপদেশ-পরামর্শ চেয়ে কখনও নিরাশ হইনি। ভুল করলে রাগ করতেন। কিন্তু পরক্ষণেই আবার পরম মমতায় সবকিছু বুঝিয়ে দিতেন। তার মৃত্যুতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা অপূরণীয়।


উদ্যোক্তাদের জন্য আদর্শ হয়ে থাকবেন
আবদুস সালাম মুর্শেদী, সভাপতি, বাংলাদেশ রফতানিকারক সমিতি


বাংলাদেশ রফতানিকারক সমিতির সভাপতি ও সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, একজন সাহসী ও চ্যালেঞ্জিং উদ্যোক্তা হিসেবে নুরুল ইসলাম স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। ব্যবসা মানেই চ্যালেঞ্জ। উৎপাদনমুখী নিত্যনতুন শিল্প স্থাপন করা আরও চ্যালেঞ্জিং। এমন বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে তিনি একের পর এক নতুন নতুন শিল্প স্থাপন করেছেন। এগুলোকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। অনেক খাতে তিনিই প্রথম বিনিয়োগকারী। তার মৃত্যুতে দেশের শিল্প খাতের অনেক বড় ক্ষতি হল। তিনি নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য আদর্শ হয়ে থাকবেন।


চ্যালেঞ্জিং উদ্যোক্তাকে হারালাম
কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, সাবেক সভাপতি এফবিসিসিআই


এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও বেসরকারি খাতের স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, নুরুল ইসলাম ছিলেন অনেক সাহসী একজন শিল্পোদ্যোক্তা। অনেক সাহস নিয়ে তিনি বিনিয়োগ করেছেন। তিনি শিল্প খাতের একজন অনুকরণীয় উদ্যোক্তা হয়ে থাকবেন। তার মৃত্যুতে আমরা দেশের একজন বড় চ্যালেঞ্জিং উদ্যোক্তাকে হারালাম। এ ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয়।


তার জীবন থেকে অনেক শেখার আছে
রকিবুর রহমান, পরিচালক, ডিএসই


ডিএসই’র পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, সফল এই উদ্যোক্তার কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। তিনি তার ভালো কর্মে দেশের মানুষের কাছে চিরদিন বেঁচে থাকবেন। আমার সঙ্গে নুরুল ইসলাম সাহেবের অত্যন্ত আন্তরিক সম্পর্ক ছিল। আমরা একসঙ্গে সকালে হাঁটতাম। তার মৃত্যুর সংবাদে হঠাৎ করে আমি নিশ্চুপ হয়ে গেছি। এ দেশের শিল্পায়নের বিভিন্ন খাতে তিনি যেভাবে অগ্রগতি করেছেন, তা আসলেই প্রশংসনীয়। তিনি তার সাহসী উদ্যোগ দিয়ে বিশ্বে দেশকে তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে যমুনা ফিউচার পার্কের মতো এমন একটা শপিংমল প্রতিষ্ঠা করা, যা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন। শপিংমলে যা থাকার, সব আছে। আমরা দুবাই বা আমেরিকায় গিয়ে অনেক শপিংমল দেখেছি, তবে যমুনা ফিউচার পার্কের মতো শপিংমল কোথাও দেখিনি। এই শপিংমলটা পৃথিবীতে আমাদের ইমেজকে অনেক বড় করেছে। এটা নুরুল ইসলাম সাহেবের অনেক বড় একটা মনের মহত্ত্বের পরিচয়। তিনি ছিলেন একজন সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা। তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা। সত্যিই তিনি একজন দেশপ্রেমিক। সত্যি তিনি একজন বড় মনের মানুষ ছিলেন। বড় মাপের মানুষ ছিলেন। অত্যন্ত একজন কর্মঠ লোক ছিলেন। অত্যন্ত সৎ মানুষ ছিলেন। সব সময় সত্যের দিকে ছিলেন। অসত্যকে কখনও প্রশ্রয় দেননি। দেশের জন্য ও দেশের মানুষের জন্য নিজেকে উজার করে দিয়েছিলেন। তিনি দেশকে ভালোবাসতেন। জাতিকে ভালোবাসতেন। দেশের মানুষের জন্য তিনি যে ত্যাগ শিকার করেছেন, এটা এদেশের তরুণদের জন্য এবং সব শ্রেণির মানুষের জন্য আনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুক।


সাহস নিয়ে শিল্প স্থাপন করেছেন
আনিস এ খান, সহসভাপতি, এমসিসিআই
মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সহসভাপতি আনিস এ খান বলেছেন, নুরুল ইসলাম ছিলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় একজন শিল্পোদ্যোক্তা। তিনি অনেক সাহস নিয়ে শিল্প স্থাপন করেছেন। তার মৃত্যুতে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হল, যা পূরণ হওয়ার নয়। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।


কঠোর পরিশ্রমী, নরম মনের মানুষ ছিলেন
মনোয়ার হোসেন, এমডি, আনোয়ার গ্রুপ


আনোয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার হোসেন বলেছেন, কঠোর পরিশ্রমের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন নুরুল ইসলাম। এক মিনিটও কাজের বাইরে সময় কাটাতে দেখিনি তাকে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ছোট-বড় সব ধরনের কাজ নিজ হাতে সামলাতেন। ছোট থেকে ছোট হিসাবও তার মাথায় থাকত। কর্মীদের ব্যাপারেও যথেষ্ট আন্তরিক ছিলেন। তার প্রতিষ্ঠানের সব কর্মীর নাম মুখস্থ থাকত। তীক্ষ্ণ বুদ্ধির অধিকারী ও জেদি মানুষ ছিলেন তিনি। তার জেদি মনোভাবের কারণে এতগুলো শিল্প সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পেরেছেন। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষই তাকে ভুল বুঝত। বাইরে কঠোর হলেও তার মন ছিল নরম। চলার পথে এর প্রমাণ পেয়েছি। তার সঙ্গে না মিশলে বুঝতে পারতাম না, তিনি কত বড় মনের মানুষ ছিলেন।


দেশ কঠোর পরিশ্রমী উদ্যোক্তাকে হারাল
হাফিজুর রহমান খান, চেয়ারম্যান, রানার গ্রুপ


রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান রানার গ্রুপের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বলেছেন, তার মৃত্যুতে দেশ একজন সাহসী উদ্যোক্তাকে হারাল। তিনি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেমন ঝুঁকি নিতেন, তেমনি সফলও হতেন। এর পেছনে ছিল তার সততা ও নিষ্ঠা। তিনি ছিলেন কঠোর পরিশ্রমী।


আপাদমস্তক উদ্যোক্তা ছিলেন
দিলিপ কুমার আগরওয়ালা, সাধারণ সম্পাদক, বাজুস


বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলিপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, বেঁচে থাকতে তার সঙ্গে যত দিন দেখা হয়েছে, তত দিনই কুশল বিনিময়ের পর তিনি নতুন নতুন উদ্যোগ সম্পর্কে কথা বলেছেন। ব্যবসা-বাণিজ্যের অনেক কিছু শিখিয়েছেন। কখনও পরামর্শ চেয়ে পাইনি, এমন নজির নেই। শিল্প-বাণিজ্যের সব খাতে পদচারণা তাকে আরও শানিত করেছে। নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। তার শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। তার মতো উদ্যোক্তা আগামী ৫০ বছরেও জন্মাবে কিনা সন্দেহ আছে। সর্বশেষ তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অর্থ দেয়ার সময়। পাশাপাশি চেয়ারে দীর্ঘক্ষণ বসে গল্প করেছি। সে সময়ও তার সঙ্গে ব্যবসায়িক আলোচনা হয়েছে।


এ রকম উদ্যোক্তা দেশে খুব কম আছে
আবদুল মাতলুব আহমাদ, সাবেক সভাপতি, এফবিসিসিআই


এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, তার রেখে যাওয়া শিল্প রিস্ক টেকার, জীবনবাজি রেখে শিল্পে বিনিয়োগ করার মতো উদ্যোক্তা দেশে আর নেই বললেই চলে। যখন আমি ব্যবসা শুরু করি, তখন যমুনা গ্রুপের এত বড় অবস্থান ছিল না। সে সময় তিনি বড় বিনিয়োগের স্বপ্নের কথা বলতেন। বিনিয়োগের পরিকল্পনাও করতে অসীম সাহস নিয়ে। স্বল্পমেয়াদি চিন্তা-ভাবনা থেকে তিনি কখনও বিনিয়োগ করেনি। তার সব বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদি। যেমন যমুনা ফিউচার পার্কের মতো এত বিশাল শপিংমল করার কথা তখন থেকেই চিন্তায় ছিল। এ রকম উদ্যোক্তা দেশে খুব কম আছে। আশা করি, তার অপূর্ণ কাজগুলো উত্তরাধিকাররা সফলভাবে পরিপূর্ণ করবে।


দেশের জন্য তার অবদান অপরিসীম
আবদুল কাদের খান, সভাপতি, বিজিএপিএমইএ


বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএপিএমইএ) সভাপতি আবদুল কাদের খান বলেন, তার সঙ্গে সরাসরি কাজ করার সুযোগ হয়নি। তবে তার সম্পর্কে যতটুকু জেনেছি, তা হল উনি একজন সৎ ও সফল ব্যবসায়ী ছিলেন। সফলতার সঙ্গে নতুন শিল্প-কারখানা স্থাপন করে গেছেন। করোনা মহামারীতেও নিজে অসীম সাহস নিয়ে অফিস করেছেন। অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের নির্দেশ দিতেন, যা অনেক শিল্পপতিই করেনি। এতেই বোঝা যায় তিনি তার প্রতিষ্ঠানকে কতটুকু ভালোবাসতেন, কাজকে ভালোবাসতেন। এই কাজপ্রীতি তার সমসাময়িকদের কাছ থেকে তাকে আলাদা করেছে। একজন আদর্শ শিল্প উদ্যোক্তা ছিলেন নুরুল ইসলাম।


সাহস ও ঝুঁকি নিয়ে বিনিয়োগ করেছেন
তানভীর আহমেদ, এমডি, শেলটেক


শেলটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ বলেন, নুরুল ইসলাম ছিলেন একজন সাহসী উদ্যোক্তা। তিনি অনেক সাহস ও ঝুঁকি নিয়ে শিল্পে বিনিয়োগ করেছেন। তার সাহস ও সফলতার কারণে তাকে সহায়তা করতে আর্থিক খাতও এগিয়ে এসেছে। তিনি সফল হয়েছেন। হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে অর্থনীতির বিকাশে বড় ভূমিকা রেখেছেন। বেসরকারি খাতকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন তিনি।


শিল্প খাতের অপূরণীয় ক্ষতি
মফিজুর রহমান, এমডি, নভোএয়ার


এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মফিজুর রহমান বলেন, কঠিন বাস্তবতাকে মোকাবেলা করে যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ৪১টি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। এগুলোতে হাজার হাজার লোকের কর্মসংস্থান করেছেন। প্রতিষ্ঠানগুলোকে সফলভাবে পরিচালনা করে তিনি দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে দেশের শিল্প খাতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, যমুনা গ্রুপ দেশের শিল্প খাতে অনেক নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়ে সেগুলো বাস্তবায়ন করেছে। এতে দেশের অর্থনীতিতে যেমন গ্রুপের অবদান বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে শিল্প খাতের প্রসার।


দেশ একজন প্রকৃত শিল্পোদ্যোক্তাকে হারাল
আবুল কাসেম খান, সাবেক সভাপতি, ঢাকা চেম্বার


ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও বিল্ডের সভাপতি আবুল কাসেম খান যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বলেছেন, তার মৃত্যুতে দেশ একজন প্রকৃত শিল্ট উদ্যোক্তাকে হারাল। তিনি ছিলেন অনেক সাহসী। ঝুঁকি নিয়ে শিল্পের বহুমুখী খাতে তিনি বিনিয়োগ করেছেন। বিনিয়োগ করে সফলও হয়েছেন। তিনি নতুন উদ্যোক্তাদের কাছে অনুপ্রেরণার জোগানদার হয়ে থাকবেন। একই সঙ্গে তিনি সব সময় নতুন নতুন শিল্প খাতের দিকে ঝুঁকতেন। দেশে অনেক শিল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তিনিই ছিলেন পাইওনিয়ার। পরে ওইসব শিল্পে অনেকে পুঁজি বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু তিনিই ছিলেন ওই শিল্পের অগ্রপথিক। তিনি আশা প্রকাশ করে আরও বলেন, যমুনা গ্রুপ তাদের কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে। একই সঙ্গে নতুন নতুন শিল্প খাতে আরও বেশি পরিমাণে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে।


মেধা, দক্ষতা, পরিশ্রম ও সাহসিকতায় তুলনাহীন
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এসএম ফরহাদ, মহাসচিব, এমটব


দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প গ্রুপ যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের মৃত্যুতে দেশের টেলিযোগাযোগ খাতের পক্ষ থেকে এমটব গভীর শোক প্রকাশ করছে। একই সঙ্গে তারা মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (এমটব) মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএম ফরহাদ (অব.) বুধবার এক বিবৃতিতে এই শোক প্রকাশ করেছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, নুরুল ইসলাম তার মেধা, দক্ষতা, পরিশ্রম ও সাহসিকতার মাধ্যমে একের পর এক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। বিভিন্ন ধরনের শিল্পকারখানার পাশাপাশি তার প্রতিষ্ঠিত দৈনিক যুগান্তর ও যমুনা টেলিভিশন দেশের মিডিয়া জগতে সফলতার স্বাক্ষর রেখে যাচ্ছে। করোনাভাইরাসের সংকট কাটিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে তার মতো উদ্যোক্তার প্রয়োজন অপরিসীম।